ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ॥ চুয়াডাঙ্গায় ৭৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ঝিনাইদহে ঘাঁটি গেড়েছিল “সমাধান ফাউন্ডেশন” নামে একটি প্রতারণামূলক সংস্থা। প্রতিষ্ঠানটি বেকার যুবক-যুবতীদের কাজ ও ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় ৪৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিকালে পুলিশের অভিযান ও গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় এই প্রতারণার চক্রের কথিত চেয়ারম্যান খন্দকার মেহেদী হাসানকে আটক করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটি ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ৪৬৯ জনের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে ৩০ হাজার টাকা করে আদায় করে। এছাড়া অনেকে বিনা রশিদে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা দিয়েছেন। সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার মেহেদী হাসান দাবি করতেন, তারা বিভিন্ন প্রডাক্ট সরবরাহ ও ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অভিযানের সময় প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে একটি প্রাইভেট কারে বিপুল অংকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় কয়েকজন। আটককৃত মেহেদী হাসান বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকারের চেষ্টা করেন।

ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী জানান, তারা ৬১ হাজার টাকা দিয়েছেন। অন্য ভুক্তভোগীদের মধ্যে বারোবাজার এলাকার কাজল ৫ লাখ, মাজেদা খাতুন ৩০ হাজার ৫০০, মিতা খাতুন ৩০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছেন। আরও শতাধিক ব্যক্তি একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন।

সরকারি গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যমতে, মেহেদী হাসান চুয়াডাঙ্গায় ৭৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ঝিনাইদহে নতুন কার্যালয় স্থাপন করেন। তার বিরুদ্ধে সারা দেশে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তার সহকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হরিণাকুন্ডুর হায়দার হাসনাত, যিনি টাকা আদায়ের মূল দায়িত্বে ছিলেন।

অভিযানের নেতৃত্বদানকারী এসআই আরিফ জানান, “সংস্থাটি স্পষ্টতই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। চেয়ারম্যানের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা আছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা আরও অনুসন্ধান চালাচ্ছে, যাতে পুরো প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *