বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী স্পিডবোটের দুর্ঘটনায় আরও তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকালে বরিশাল সদর নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট চারজনের মরদেহ উদ্ধার হলো, তবে এখনও একজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন।
নৌ পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে কীর্তনখোলা নদীর লাহারহাট খালের প্রবেশমুখে জনতার হাট এলাকায় ভেসে ওঠে তিনটি মরদেহ। এরপর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহগুলো উদ্ধার করেন। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে চালক আল আমিন ভোলা সদরের ভেদুরিয়া উত্তর চর এলাকার মো. সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে, মো. ইমরান হোসেন ভোলা সদরের ধনিয়া এলাকার মো. শাহাবুদ্দিনের ছেলে এবং রাসেল আমিন পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার নেওয়াপাড়া এলাকার আজগর আলী হাওলাদারের ছেলে বলে তাদের স্বজনরা শনাক্ত করেছেন।
এদিকে, এখনও নিখোঁজ থাকা যাত্রী সজল দাস (৩০) নামে এক ব্যক্তির সন্ধান চলছে। তিনি বরিশাল নগরের বিমানবন্দর থানার রহমতপুর এলাকার দুলাল দাসের ছেলে এবং ভোলায় ব্র্যাক ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ১০ জন যাত্রী নিয়ে স্পিডবোটটি ভোলা থেকে বরিশালের ডিসি ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। কীর্তনখোলা নদীর লাহারহাট খাল থেকে প্রবেশকালে বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষের পর স্পিডবোটটি ডুবে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই এক যাত্রী নিহত হন এবং এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। নিহত যাত্রীর নাম ছিল জালিস মাহমুদ (৫০)। তিনি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন এবং স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডে ভোলা শাখায় বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য মানসুর আহমেদ (৩০) ভোলার দৌলতখান থানার কনস্টেবল ছিলেন এবং তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডুবুরিরা তিন দিন ধরে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে অভিযান চালিয়েছিলেন, তবে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকালে একে একে তিনটি মরদেহ ভেসে ওঠে এবং তা উদ্ধার করা হয়। বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, মরদেহগুলো উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, সজল দাসের মরদেহ উদ্ধারের জন্য এখনো অভিযান চলছে। নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করতে আরও প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।