মাদারীপুর প্রতিনিধি ॥ মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় বিপুল উৎসাহ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্দমনীয় আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদররা এ এলাকা থেকে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়। এ দিন কালকিনি হানাদার মুক্ত ঘোষিত হয়।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে এ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে একটি আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিটি উপজেলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে উপজেলার প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া আব্দুর রহিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী আকন, এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক বেপারী।
সভায় মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের সেই গৌরবময় দিনের স্মৃতিচারণা করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক বেপারী জানান, কালকিনি উপজেলায় স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময়জুড়ে হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং ধর্ষণের মতো নির্মম ঘটনা ঘটায়। মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাস ধরে বেশ কিছু দুঃসাহসিক অভিযান চালান, যার মধ্যে ভুরঘাটা লালপোল ও করিমগঞ্জবাজার ঘাঁটিতে হামলা উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে হানাদার বাহিনী পালাতে বাধ্য হয় এবং কালকিনি হানাদার মুক্ত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ জানান, দিবসটি উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানানো এবং তাদের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত করাই ছিল মূল লক্ষ্য।
দিবসটি উদযাপনে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো ছিল।