ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচন অতীতের চেয়ে অনেক কঠিন হবে। মাঠে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ না থাকলেও ষড়যন্ত্র ও অদৃশ্য শক্তি সক্রিয় রয়েছে। এই বাস্তবতায় দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্যশীল আচরণ, সংগঠিত উদ্যোগ এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সতর্কতার আহ্বান
তারেক রহমান বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবার সুযোগ নেই। অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং এটি মোকাবিলায় দলীয় নেতাকর্মীদের ধৈর্যশীল হতে হবে। আমরা জনগণের ম্যান্ডেটে বিশ্বাস করি, নিশিরাতের নির্বাচন বা ব্যালট চুরির ভোট নয়। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।”

তিনি দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ছাত্রদল, যুবদল বা মহিলা দলের সদস্য হিসেবে আপনাদের চলাফেরা, কথাবার্তা এবং জনগণের সঙ্গে আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে। জনগণের সঙ্গী না হলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।”

দেশ পরিচালনার সুযোগ জনগণের হাতেই
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, “আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। বরং জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার সুযোগ চাই। এর পার্থক্য বুঝতে হবে। জনগণ যদি আমাদের সেই সুযোগ দেয়, তবে দেশের উন্নয়নে সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করব।”

তিনি আরও বলেন, অতীতে ক্ষমতা দখলকারী স্বৈরাচার সরকারগুলো জনসমর্থন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকেছে। কিন্তু বিএনপি দেশ পরিচালনার জন্য জনগণের সমর্থনকেই প্রাধান্য দেবে।

দুর্নীতি ও অর্থপাচার নিয়ে ক্ষোভ
তারেক রহমান বলেন, “গত ১৫ বছরে দেশের প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। এটি দেশের বাজেটের সঙ্গে তুলনীয়। এই অর্থ ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক ফোরামের সহযোগিতা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছি। ভবিষ্যতে জনগণের সমর্থন পেলে আমরা আরও জোরালো পদক্ষেপ নেব।”

তিনি বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক ফোরাম ছাড়াও প্রাইভেট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব। দেশের জনগণের সম্পদ ফেরত আনতে যারা সহযোগিতা করবে, তাদের সঙ্গে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত।”

ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্যের আহ্বান
তারেক রহমান আরও বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দলীয় ঐক্য জরুরি। জনগণের ম্যান্ডেট পেতে হলে আমাদের সবার আগে জনগণকে সঙ্গে নিতে হবে।”

কর্মশালায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা আরও বাড়ানোর পাশাপাশি ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নের কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়।

উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও সাহসী পদক্ষেপের প্রতিধ্বনি
তারেক রহমান বলেন, “আমরা জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সাহসী পদক্ষেপ নেব। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও অর্থপাচার রোধের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *