বরিশাল প্রতিনিধি ॥ বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীরে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল। বুধবার (২৭ নভেম্বর) জোহরের নামাজের পর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী এই আধ্যাত্মিক মহাসম্মিলন শুরু হয়। এই মাহফিলে লাখো মুসল্লি দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আত্মশুদ্ধির উদ্দেশ্যে সমবেত হন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে চরমোনাই পীর বলেন, “চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্যে নয়, এটি পথভ্রষ্ট মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। এখানে যারা দুনিয়ার মোহ নিয়ে এসেছেন, তারা নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির প্রস্তুতি নিন।”
চরমোনাই দরবারের মাদ্রাসা মাঠ ও তিন নম্বর মাঠে লাখো মুসল্লি অংশ নেন। আয়োজক কমিটির সদস্যদের মতে, মঙ্গলবার থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস ও লঞ্চযোগে মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন। মাহফিল চলবে শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত, আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটবে।
মাহফিল উপলক্ষে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এতে ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ৪০ জন চিকিৎসক এবং ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সহস্রাধিক মানসম্মত শৌচাগার, অজু ও গোসলখানার মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিন দিনের এই মাহফিলে সাতটি মূল বয়ান থাকছে, যার মধ্যে পাঁচটি করবেন চরমোনাই পীর নিজে। নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম দুটি বয়ান করবেন। এছাড়া শীর্ষস্থানীয় ওলামা ও বিভিন্ন দরবারের পীররা বক্তব্য দেবেন।
প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি সম্মেলন। দ্বিতীয় দিনে হবে ওলামা সম্মেলন, এবং শেষ দিনে ছাত্র ও যুবকদের জন্য পৃথক আয়োজন। শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ।
মাহফিলে মুসল্লিদের শৃঙ্খলা রক্ষায় কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছেন। তারা মাঠে নিরাপত্তা ও সহায়তার দায়িত্ব পালন করছেন।
আগামী শনিবার সকাল ৮টায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মাহফিলের সমাপ্তি ঘটবে। লক্ষাধিক মানুষের এই মহাসম্মেলন প্রতিবারের মতো এবারও সারা দেশের মুসলমানদের আধ্যাত্মিক জীবনে নতুন প্রেরণা এনে দেবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন।