হিলি প্রতিনিধি ॥ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার আলু ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে অনলাইনে রপ্তানির স্লট বুকিং বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরসহ পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মাত্র চারটি বীজ ও একটি বাদামবাহী ভারতীয় ট্রাক দেশে প্রবেশের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। হিলি বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, ভারতের রপ্তানিকারকরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের হঠাৎ সিদ্ধান্তের কারণে আলু ও পেঁয়াজ পরিবহন বন্ধ রেখেছে।
তিনি বলেন, “ভারতীয় রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনলাইনে স্লট বুকিং বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে হিলি স্থলবন্দর ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে, তবে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি।”
এদিকে পণ্য আমদানি বন্ধের প্রভাব ইতোমধ্যে বাজারে পড়তে শুরু করেছে। সোমবার পর্যন্ত যে ভারতীয় আলু ৫৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল, তা মঙ্গলবার বেড়ে ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও কেজি প্রতি ৮০ টাকায় উঠেছে।
হিলি বন্দর বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মঈনুল হোসেন বলেন, “আমদানি বন্ধ হওয়ায় আলুর দাম বেড়েছে। ভারতীয় আলু ৬৫-৭০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। গুদামে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ছে, আগামীকাল দাম আরও বাড়তে পারে।”
ভারতের একজন রপ্তানিকারক জানান, পশ্চিমবঙ্গে আলু ও পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজ্য সরকার রপ্তানি সীমিত করতে স্লট বুকিং বন্ধ করেছে। এ পরিস্থিতিতে আলু ব্যবসায়ীরা বৈঠকে বসলেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।
তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে আমরা আগের এলসির পণ্যও সরবরাহ করতে পারছি না। কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রাক রাস্তায় আটকে রয়েছে এবং পরিবহন বন্ধ রয়েছে।”
হিলি বন্দরের জিরো পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা হাফিজ উদ্দিন বলেন, “আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে কোনো ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করেনি। শেষবার সকালবেলায় চারটি বীজ এবং একটি বাদামবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছিল। এরপর আর কোনো ট্রাক আসেনি।”
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, আমদানি বন্ধ থাকায় পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। বাজারের চাহিদা মেটাতে আমদানি স্বাভাবিক করার জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের দ্রুত সমাধানের দাবি জানান তারা।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধের কারণে শুধু হিলি নয়, দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরেও এ সমস্যা চলছে।