ডেস্ক রিপোর্ট ॥ কেন্দ্রীয় রাজনীতির একসময়ের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু, আওয়ামী লীগের গুলিস্তানের ১০ তলা কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি এখন অবহেলা, ধ্বংস এবং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যালয়টি জনশূন্য হয়ে পড়েছে। কোনো নেতাকর্মীর আর এই ভবনে দেখা মেলে না। এর ফলে ভবনটি এখন মাদকসেবী, ছিন্নমূল মানুষ এবং দুষ্কৃতকারীদের দখলে চলে গেছে।
পোড়া ভবনের অবস্থা
ভবনটির বাইরেই পোড়া দেয়ালের চিহ্ন স্পষ্ট। নামফলক এবং আসবাবপত্রসহ বেশিরভাগ জিনিস চুরি হয়ে গেছে। নিচতলা থেকে শুরু করে প্রতিটি তলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পোড়া কাঠ, কাচ, ছাই এবং ধ্বংসাবশেষ। দ্বিতীয় তলার ফ্লোরে মিশে থাকা পানি, পোড়া কাগজ এবং ভাঙা আসবাবের অংশ পুরো ভবনের করুণ অবস্থাকে প্রতিফলিত করছে।
ভবনের প্রতিটি তলায় বিভিন্ন ধরনের মাদকের বোতল পাওয়া গেছে। এই ভবন এখন মাদকসেবীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষত ভবনের নিচতলা ব্যবহৃত হচ্ছে পাবলিক টয়লেট হিসেবে।
অরক্ষিত ভবন, অবাধ প্রবেশ
স্থানীয়রা জানান, কার্যালয়টি বর্তমানে কোনো সুরক্ষার আওতায় নেই। কিছু রিকশাচালক এবং ছিন্নমূল মানুষ ভবনের বিভিন্ন তলায় বিশ্রাম নিতে আসেন। ভবনের ওপরের তলাগুলোতে তাদের মধ্যে কেউ খেলাধুলা করেন, কেউ মাদক সেবন করেন।
ভবনের একজন ব্যবহারকারী সোলায়মান বলেন, “সব আসবাবপত্র চুরি হয়ে গেছে। এখনো কিছু মানুষ ভবনের রড কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ভবনটি এখন দখলদারদের হাতে চলে গেছে।”
অন্যদিকে পথচারী শরীফুল ইসলাম ভবনটির করুণ পরিণতিকে আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ডের ফল বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এই ভবন থেকে দেশের মানুষের ওপর নির্যাতনের নকশা আঁকা হতো। এখন এই ভবন ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে।”
৫ আগস্টের ঘটনা এবং এর পরিণতি
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাসহ প্রায় সব নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। সেই সময় সারা দেশে দলটির বিভিন্ন কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ জনতা। গুলিস্তানের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও সেই ক্ষোভের শিকার হয়।
এরপর থেকে কার্যালয়টি অরক্ষিত পড়ে আছে। কোনো নেতাকর্মী সেখানে আসেন না। ফলে ভবনটি ক্রমে মাদকসেবী এবং দুষ্কৃতকারীদের দখলে চলে গেছে।