বরিশাল প্রতিনিধি ॥ প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটির আয়োজনে এবং উন্নয়ন ব্যক্তিত্ব আনোয়ার জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তারা প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা এবং এর প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন।

সভায় জানানো হয়, উন্নত দেশগুলোতে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উন্নত হওয়ায় পরিবেশ ঝুঁকি কম হলেও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটি ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকায় মাথাপিছু বছরে ২৪ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহৃত হলেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে এ দূষণ দেশের পরিবেশকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে।

বক্তারা উল্লেখ করেন, মাইক্রো প্লাস্টিক ইতিমধ্যে শস্য ও মৎস্য উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৩ শতাংশ বোতলজাত পানীয়তে মাইক্রো প্লাস্টিকের অস্তিত্ব রয়েছে। বিশ্বব্যাপী বছরে প্রায় ৪৬০ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হলেও এর মাত্র ৯ শতাংশ রিসাইকেল হচ্ছে।

ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে যা সরাসরি নদী, খাল ও সাগরে গিয়ে মিশছে। বক্তারা জানান, ২০০২ সালে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার আইন প্রণয়ন হলেও এর কার্যকর বাস্তবায়ন এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক শুভংকর চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কমিউনিকেশন ও নেটওয়ার্কিং অফিসার আলী আজম আজমান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার আলমগীর হোসেন এবং সাংবাদিক আনিসুর রহমান খান স্বপন। সভায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা প্লাস্টিক দূষণ রোধে উৎপাদন পর্যায়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর আহ্বান জানান। তারা বলেন, প্লাস্টিক দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি উৎপাদন সীমিত করা অত্যন্ত জরুরি।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিকমুক্ত পর্যটনের দাবিতে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি মহিপুর জেলে পল্লীতে জেলেদের মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *