ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে পেরে গর্বিত বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আসিফ মাহমুদ সজীব নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে বলেন, “আপনাকে এই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।” তিনি এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিজের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও নাহিদ ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪”।
খালেদা জিয়া প্রায় ছয় বছর পর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ২১ নভেম্বর বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে পৌঁছান। সেনাকুঞ্জে যাওয়ার আগে খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হন। শেষবার ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার সেনানিবাসে বাসস্থান নিয়ে অনেক বিতর্কও রয়েছে। ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়তে হয় তাকে, এবং বিএনপি দাবি করেছিল যে, তাকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে সেনানিবাস থেকে উচ্ছেদ করা হয়। ওই সময় খালেদা জিয়া কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে তাকে প্রেসিডেন্ট জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছে।”
২০১৮ সালে দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যান। বিএনপি দাবি করেছিল যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। পরে ২০২০ সালে, পরিবারের আবেদনে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রতি ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
এদিকে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মুক্তি পান। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় রয়েছেন। তবে, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসসহ একাধিক রোগে আক্রান্ত এবং আগামী মাসে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।