ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ইতোমধ্যেই এই স্কলারশিপ কার্যক্রমে ১০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। সামা টিভির এক প্রতিবেদনে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর পাকিস্তান এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
২০১৫ সালে নেওয়া এক সিদ্ধান্তের ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো একাডেমিক সমঝোতা স্মারক কার্যকর ছিল না। তবে সম্প্রতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নীতিনির্ধারণী ফোরামে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীরা আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে। একইভাবে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দরজা উন্মুক্ত হলো।

ঢাবির নিষেধাজ্ঞা আরোপের পেছনে ছিল ২০১৫ সালের একটি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত। সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি জানানো, এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান করা হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপিত থাকছে না।

স্কলারশিপ কার্যক্রমের বিস্তারিত
পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিগগিরই তাদের নিজস্ব পোর্টালে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যুক্ত করবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজে স্কলারশিপ প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে পাকিস্তান সরকার ইতিবাচকভাবে দেখছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন
সামা টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে। পাকিস্তানের শিক্ষাবিষয়ক পদক্ষেপও এ উন্নয়নের অংশ।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। এই স্কলারশিপ কার্যক্রমের ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়বে এবং সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।

পাকিস্তানের লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের শিক্ষা খাতে তাদের আন্তঃদেশীয় ভূমিকা জোরদারের এক প্রচেষ্টা। এর পাশাপাশি এটি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে থাকা দূরত্ব কমানোর কৌশল হিসেবেও কাজ করবে।

স্কলারশিপের সুযোগ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের দিকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *