ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে। তবে আগে জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, অপরাধ প্রমাণিত না হলে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার পাবেন।
টাইম ম্যাগাজিন-এ প্রকাশিত এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তার প্রত্যাবর্তন এবং সহিংসতার মামলার বিচার চাইলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাতে সাড়া দেবেন বলে মনে হয় না।”
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, “ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী, এবং আমরা বাংলাদেশে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের বিষয়ে কাজ করছি।”
ড. ইউনূস জানান, দেশে ছয়টি বড় সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে, যার মধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি প্রশাসন এবং সংবিধান সংশোধন অন্তর্ভুক্ত।
আওয়ামী লীগের অর্থ পাচার এবং দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ
ড. ইউনূস জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হাজার কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এই অর্থ উদ্ধারে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইনের সহযোগিতায় একটি “ব্লক মেকানিজম” ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান এ উদ্যোগের সমালোচনা করে বলেছেন, “ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন কোনো রাজনৈতিক আলোচনার ভিত্তিতে হয়নি, যা স্বৈরাচারী সরকারের ইঙ্গিত দেয়।”
নির্বাচনের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আমি কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করিনি। আমাদের রেললাইনগুলো ঠিক করতে হবে, যাতে দেশ সঠিক পথে এগোয়।”
তিনি আরও বলেন, “দেশকে পুনর্গঠিত করতে রাষ্ট্রীয় সংস্কারই একমাত্র পথ। এ কারণেই আমরা আমাদের লক্ষ্যকে বাংলাদেশ ২.০ বলছি।”