মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ॥ মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগে পানিশাইল নিজগাঁও গ্রামে আলোচিত আব্দুল মালিক হত্যাকান্ডে মামলার বিচার প্রক্রিয়া ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে একটি মহল অপকৌশল চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) বেলা ৩টায় রাজনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নিহত আব্দুল মালিকের স্ত্রী সাবরিনা আক্তার তার স্বামী হত্যার লোহমহর্ষক বর্ণনা তুলে ধরেন এবং বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেন।

তিনি জানান, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় আব্দুল মালিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিহত আব্দুল মালিক চৌধুরী বাড়ির পৈত্রিক সম্পত্তির কেয়ারটেকারের দায়িত্বে ছিলেন। এ ঘটনায় এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু বাদী হয়ে রাজনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নম্বর ছিল ৯/১৯২। হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে মামলার ৩ আসামিকে গ্রেফতার করে, এবং পরবর্তীতে আরও তিনজন ভাড়াটিয়া খুনীকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে।

সাবরিনা আক্তার বলেন, “আবদুল মালিক হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাকে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। নিরাপত্তার কারণে তিনি নিজেকে এবং তার মেয়ে স্কুলে পাঠাতে পারছেন না।” তিনি আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের মূল অপরাধী নুরুল ইসলাম কলা মিয়া পূর্বেও আব্দুল মালিককে হুমকি-ধামকি প্রদান করতেন এবং শারীরিকভাবে আঘাতও করেছিলেন। এর পরেই আব্দুল মালিক তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন।

এছাড়া, সাবরিনা আক্তার বলেন, “আবদুল মালিক হত্যার পর এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে অপপ্রচার শুরু হয়েছে। প্রতিপক্ষরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘আয়না ঘর’ এবং ‘টর্চার সেল’ বলে গুজব রটাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” তিনি আরো দাবি করেন, “আবদুল মালিকের হত্যাকাণ্ডের পর আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং মামলা নিয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে, যাতে মামলার বিচার প্রক্রিয়া ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয়।”

স্বামী আব্দুল মালিক হত্যার দ্রুত বিচার ও তার শিশু সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের সহায়তা চান সাবরিনা আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহতের মা সালেহা বেগম ছায়া, মামা রফিক আলী, শশুর কমরু মিয়া, সহোদর ভাই আব্দুল হাকিম, চাচাতো ভাই লেবু মিয়া, মেয়ে আফসারা আঞ্জুমসহ অন্যান্য স্বজনরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *