ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতাধীন অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ত্রয়োদশ বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছিল, যা তখনকার গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। তবে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বর্তমান বিশ্বের বিশেষ গুরুত্ব এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সুপারিশের কারণে ১৯৭৩ সালের আইনটি এখন আরো সমন্বিত ও যুগোপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।
এখানে মূলত রোম স্ট্যাচু অব দ্যা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (ICC) এর সঙ্গে সামঞ্জস্যতা আনানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে আইনটি আন্তর্জাতিক আইন ও আইনের প্রতিষ্ঠিত বিধানগুলোর সাথে আরও সঙ্গতিপূর্ণ হবে। এই সংশোধনীর খসড়ায় উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমনঃ অপরাধের দায় নির্ধারণ, ভিডিও ও অডিওর মাধ্যমে বিচারকাজ সম্প্রচার, বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের বিধান, অভিযুক্তের অধিকার সংরক্ষণ, সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা, তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তল্লাশী ও জব্দ করা এবং সাক্ষী ও ভিকটিমের সুরক্ষা প্রদান ইত্যাদি।
এছাড়া, খসড়ার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয়, মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনদের সঙ্গে মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী খসড়ায় পরিমার্জন করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এদিকে, বর্তমান সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর এবং আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আইনটি সংশোধন করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদের নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
এখন, এই সংশোধনী অধ্যাদেশের খসড়া আইনের কার্যকরী বাস্তবায়নে একটি নতুন দিশা তৈরি করবে। মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আশা করছে যে এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, অভিযুক্তদের অধিকার ও ভিকটিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে, যা আন্তর্জাতিক মানের বিচার প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।