ডেস্ক রিপোর্ট ॥ জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদালত আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। এই মামলায় দুইটি অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
শেখ হাসিনার অবস্থান জানালেন চিফ প্রসিকিউটর
এর আগে, ট্রাইব্যুনালে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করতে উপস্থিত হন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শেষ করার জন্য আদালতের কাছে আরও সময় চাওয়া হয়েছে।
এই সময় আদালত জানতে চায়, শেখ হাসিনা কোথায় আছেন? জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের দিন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
তিনি আরও জানান, ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে।
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলা: তদন্তের শেষ সময় ও গ্রেপ্তার আদেশ
ট্রাইব্যুনাল একই সঙ্গে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা দুইটি মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।
এছাড়া, আদালত ১৩ জন আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হকসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনাল গত ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের মন্তব্য
ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, এই মামলার তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করা হবে। তবে, আদালতের কাছে আরেকটি বিষয় উঠে আসে, তা হলো আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে এসব মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম আসায় রাষ্ট্রীয় দিক থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এদিকে, মামলার প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি আশাবাদী যে, দ্রুত সময়ে মামলা তদন্ত শেষ হয়ে যাবে এবং বিচারের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে।