ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ॥ গত ৫ আগস্ট সরাইল রাজপথে বিএনপির ব্যানারে এক মিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং দেশের বাইরে যাওয়ার খবরে সরাইল উপজেলা থেকে শুরু হওয়া এক আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই আন্দোলনে এলাকার বিভিন্ন নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে না আসার পর আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

এদিকে, সরাইল উপজেলার অরুয়াইলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, অরুয়াইল ইউনিয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাচ্চু মিয়ার নাম আলোচনায় উঠে এসেছে। ২০২২ সালে অরুয়াইল ইউনিয়ন বিএনপি কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার পর, বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে যে তিনি একই সময় আওয়ামী লীগের কমিটিতেও ছিলেন।

এই বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে জমি সংক্রান্ত সমস্যা থেকে, যেখানে বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি দলের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, বাচ্চু মিয়া কখনো তাদের দলের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন না। অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা দাবি করছেন যে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত এবং তার বিরুদ্ধে প্রচারিত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বাচ্চু মিয়া নিজে বলেন, “আওয়ামী সরকারের আমলে আমাকে একাধিক মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে, আর এখন কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে বিএনপি ছাড়িয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার অভিযোগ তুলছে। এসব ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা।”

এ বিষয়ে অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব মিয়া বলেন, “বাচ্চু মিয়া কখনো আমাদের দলের সদস্য ছিলেন না, তবে তার বিরুদ্ধে কিছু জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে।” অন্যদিকে, বিএনপির নেতারা তার পক্ষে কথা বলেছেন এবং দাবি করেছেন যে বাচ্চু মিয়া একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শিকার।

এ ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র আলোচনা চলছে, যেখানে রাজনৈতিক দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের পাশাপাশি জমি সংক্রান্ত বিরোধও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অরুয়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জানান, “বাচ্চু মিয়া বিএনপি পরিবারের লোক, এবং এসব অভিযোগ মিথ্যা।”

এটি স্পষ্ট যে, সরাইলের রাজনীতিতে এখন নানা ধরণের গুঞ্জন এবং বিশৃঙ্খলা চলছে, যা ভবিষ্যতে দলীয় রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *