ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ঝালকাঠি জেলার উপকূলে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির মোকাবেলায় নেয়া হয়েছে সবরকম প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে জেলা বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়ের তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে।

বিশেষ করে কাঁঠালিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গাছ পড়ে মাদরাসা ও কাঁচা বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিনমজুর ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হয়েছে। এলাকার কৃষকদের শীতকালীন শাকসবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা জানান, জলাবদ্ধতার কারণে লালশাক, শিম, বরবটি, শালগমসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়েছে।

কাঁঠালিয়া উপজেলার বড় কাঁঠালিয়া গ্রামের জেলে আলতাফ হোসেনের বসতঘরও গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। আলতাফ জানিয়েছেন, তার পাশের কৃষক আবু হানিফের একটি গরু গাছ চাপা পড়ে মারা গেছে। আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের ছিটকি নেছারিয়া সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইদ্রিস মাঝি বলেন, সকাল থেকে বিরামহীন বৃষ্টির কারণে তার মাদরাসার টিনের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার শাখাগাছি গ্রামের কৃষক ও সবজি বিক্রেতা নিতাই হাওলাদার বলেছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে তার সবজি চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। তিনি জানান, আগাম শীতের সবজি লাগানোর পর বৃষ্টিতে তা ভেসে গেছে এবং এখন মৌসুম শুরুতে লাগানো নতুন চারা রক্ষা করা সম্ভব নয়।

জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান জানিয়েছেন, জরুরি মুহূর্তে আশ্রয় নেওয়ার জন্য জেলায় ৮২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৬২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া ৩৭টি মেডিকেল টিম ও ফায়ার সার্ভিসের ৮টি উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৪০০ টন চাল জরুরি ত্রাণের জন্য মজুদ করা হয়েছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ. কে. এম. নিলয় পাশা বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে, তবে কিছু এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে শাকসবজির ক্ষতি হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *