ডেস্ক রিপোর্ট ॥ গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর গণমাধ্যমে এ বিষয়টি নিয়ে প্রচার হয়। কিন্তু সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, “শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, এমন কোনো দালিলিক প্রমাণ আমার কাছে নেই।” রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্যের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
আন্তর্বর্তী সরকার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারপতনে মূল ভূমিকা পালন করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, “রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন। ৫ আগস্ট তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু এখন বলছেন, তার কাছে পদত্যাগপত্র নেই। এটি স্ববিরোধিতা।” তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ধারাবাহিকতা ভঙ্গ করেছে, যা শপথ ভঙ্গের সামিল।”
তবে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার পদত্যাগকে মীমাংসিত উল্লেখ করে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি না করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার রাতে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে জনমনে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর সুপ্রিম কোর্টের আদেশে রয়েছে।”
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, বর্তমান সরকার কি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে পারে? আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা সম্ভব নয়। তবে রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় বা সরকারের কথায় পদত্যাগ করতে পারেন।” তিনি বলেন, “ক্ষমতায় যারা আছেন, তারা রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারেন। সেনাবাহিনীও যদি চায়, তবে এক সেকেন্ডের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা সম্ভব।”