পিয়াস করিম চলে গেলেও,রেখে গেলেন (একজন বুদ্ধিজীবীকে) শেষ শ্রদ্ধা না পাওয়ার স্মৃতি।
বাংলাদেশের অন্যতম সাহসী বুদ্ধিজীবী, সমাজবিজ্ঞানী ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. মঞ্জুর করিমের (পিয়াস
করিম) ১০ ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
গত (১৩ অক্টোবর,২০১৪) সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মারা যান পিয়াস করিম।
মৃত্যুর আগের কয়েকটি বছর ড. পিয়াসের সঙ্গে বিএনপির ঘনিষ্টতা বাড়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করতে জনমত তৈরিতে টিভি টকশো, সভা-সমিতে ব্যাপক প্রচারণা চালান তিনি।
ফলে আজীবন প্রগতিশীল এ মানুষটি আওয়ামী লীগপন্থী মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের কট্টর আক্রমণ ও অপবাদের শিকার হন তিনি। তারা তাকে রাজাকারপুত্র বলেছিল।
অবশ্য তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নিশ্চিত করেই বলেছিলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বৈঠক করায় ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্কুল ছাত্র পিয়াস করিমকে আটক করেছিল। পিয়াসের নানা যুক্তফ্রন্ট সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জহিরুল হক লিল মিয়া কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও তার বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিম প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।”
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে পিয়াসের অপবাদ মোচন হলেও তার লাশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিতে দেওয়া হয়নি।
তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে পিয়াসের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং সরকার বিরোধী সর্বস্তরের জনতা তাকে শ্রদ্ধা জানায়।
ড. পিয়াস করিমের জন্ম ১৯৫৮ সালে কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার রামপুর গ্রামে। তিনি কুমিল্লা মডার্ন স্কুল, কুমিল্লা জিলা স্কুল এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়াশোনা করেন।
এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানকার ইউভার্সিটি অব ন্যাবরাস্কায় তিনি পড়াশোনা করেন। ক্যানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি নেন।
পড়াশোনা শেষ করে ড. পিয়াস করিম সেখানকার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। দেশে ফিরে ২০০৭ সালে তিনি বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
উল্লেখ্য, পিয়াস করিমের স্ত্রী আমেনা মহসিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক।