ডেস্ক রিপোর্ট: দেশে এক যুগ ধরে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। যদিও ২০১৪ সালের পর থেকে জ্বালানি বিভাগ নতুন আবেদনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তবে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার আবাসিক গ্যাস সংযোগ পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। তিতাস গ্যাস কোম্পানির মাধ্যমে পেট্রোবাংলায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মকর্তাদের মতে, বৈধ উপায়ে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ গ্রাহক অবৈধ উপায়ে গ্যাস ব্যবহার করছে। তারা জানান, “বহু গ্রাহক বার্নার সংখ্যা বাড়িয়ে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছেন, ফলে কোম্পানিগুলো রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

সম্প্রতি তিতাসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভায় কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে তারা ক্লান্ত। আবাসিক খাতে ১২ শতাংশ গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে, অথচ শিল্প খাতে হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আবাসিক খাতে নতুন সংযোগ এবং বার্নার বর্ধিতকরণ অনুমোদন দিলে শত কোটি টাকা রাজস্ব বৃদ্ধি হবে।

পেট্রোবাংলার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় সিন্ডিকেটের কারণে অবৈধ গ্যাস সংযোগ পাওয়া সহজ হয়ে গেছে। তারা বলেন, “প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এসব সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে।” তিতাস বর্তমানে সাড়ে ২৮ লাখ গ্রাহকের কাছে আবাসিক গ্যাস সরবরাহ করছে, কিন্তু তাদের ধারণা, বৈধ গ্রাহকের সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে এর দ্বিগুণ হতে পারে।

২০১০ সালের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ২০১৩ সালের শেষের দিকে আবারও সংযোগ চালু হলেও পরবর্তী সময়ে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জ্বালানি বিভাগ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আবাসিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না এবং গ্রাহকদের ডিমান্ড নোটের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে, ২০২৪ সালেও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *