পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার পানি শাখার বকেয়া বিল প্রায় কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এ বকেয়া বিলের তালিকায় নাম রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলরের মতো একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বারবার নোটিশ প্রদান এবং মাইকিং করার পরও বকেয়া টাকা আদায় সম্ভব হয়নি। এ কারণে শীঘ্রই সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করছে পৌর প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পৌরসভার হোল্ডিং ট্যাক্সও বকেয়া রয়েছে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ২৮৭ টাকা। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং জনবল নিয়োগে সাবেক মেয়রদের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে পৌরসভার কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। শহরের অনেক সড়ক ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এবং ড্রেন-জলাশয় পরিষ্কার না করায় ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বাড়ছে। গরু-ছাগল রাস্তার ওপর ময়লা-আবর্জনা ফেলায় নাগরিকদের জন্য হাঁটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে রাতের শহরে চুরি, ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে।

পৌরসভার পানি শাখার ক্লার্ক মো. আলমগীর হোসেন জানান, ১ম শ্রেণির এ পৌরসভার গ্রাহক সংখ্যা ৪ হাজার ৭শ’ ২৫। এর মধ্যে ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ১০ ইউনিট পানি বিল মওকুফ করা হয়েছে। বর্তমানে ১৫২টি সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

আলমগীর হোসেন আরও জানান, বকেয়া ৭৪ লাখ ১৪ হাজার ৪’শ ৩১ টাকার বিল আদায় করার জন্য তারা নোটিশ এবং মাইকিং করেছেন। যদিও ৯টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরও কয়েকজন প্রভাবশালী গায়ের জোরে অবৈধভাবে পানি ব্যবহার করছে। এসব প্রভাবশালীর মধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুব উদ্দিন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনির বেপারীর নাম উল্লেখযোগ্য।

পৌরসভার পানি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. অলিউল্লাহ জানান, ৬০০ গ্রাহকের কাছে পানি শাখার বকেয়া বিল পাওনা রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু নাম উল্লেখ করে জানান, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর রোজিনা আখতারের স্বামী সবুজ মিয়ার কাছে ২০ হাজার ৩১ টাকা বকেয়া রয়েছে। অলিউল্লাহ জানান, প্রশাসকের নির্দেশে শীঘ্রই সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান চালানো হবে।

এদিকে, পৌরসভার নিজস্ব পানি বিল বকেয়া রয়েছে ১৯ হাজার ৬’শ ৫০ টাকা। সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে মৃত রুহুল আমিনের কাছে বকেয়া রয়েছে ৫৫ হাজার ৬২ টাকা।

কলাপাড়া পৌরসভার প্রশাসক ও ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নাগরিক সেবা নিশ্চিতে আমরা কাজ শুরু করেছি। এখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তিনি আরও জানান, শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে গরু-ছাগলের উপদ্রব রোধে খোয়াড় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *