আবদুল হাই শিকদার একজন প্রখ্যাত বাংলা সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন তার প্রবন্ধ, কলাম, ও সামাজিক বিষয়ক লেখার জন্য। শিকদার সমাজের অসঙ্গতি ও বৈষম্য নিয়ে সোচ্চার ছিলেন এবং তাঁর লেখায় এসব সামাজিক সমস্যা তুলে ধরেছেন। তিনি মানুষের অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের পক্ষে কলম তুলে নিয়েছেন। শিকদারের সাহিত্যকর্ম ও সাংবাদিকতা সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি এবং পরিবর্তনের জন্য অবদান রেখেছে।

১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের সেই গনগনে দিনে খালেদা জ্যোতির্ময়ী কবিতার জন্ম । ১৯৯৩ সালে “ যে আগুন ছড়িয়ে দিলে “ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয় এই কবিতা।

খালেদা জ্যোতির্ময়ী

তুমি আমার ধুলিকে করেছো পবিত্র মৃত্তিকা
বেদনা করেছো সঙ্গীতময়,
নদীকে দিয়েছো গতি,
জাতির জন্য স্বৈরশাসনমুক্ত প্রথম ভোর।

তোমার জন্য লিখলাম আমি পদ্মা-কর্ণফুলি।

তুমি আমার আকাশ থেকে সরিয়ে দিয়েছো মেঘ।
বারুদ এবং আগ্রাসনের অন্ধ করেছো চোখ।
বৃক্ষকে তুমি সবুজ করেছো
সবুজ পেয়েছে দেশ
—দেশজুড়ে আজ মহিমান্বিত তোমার জয়ধ্বনি।

তোমার নামের পাশে রাখলাম এশিয়ার সব ফুল।

তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছো বলবার অধিকার।
কষ্টের জ্বালা মুছিয়ে দিয়েছো পরম মমতা দিয়ে।
কর্দমে তুমি ফুটিয়ে তুলেছো শপথের শতদল,
সেই শতদলে সকল কালের ব্যথিতজনের আশা।
হাতে নিয়ে তুমি এসেছো জ্যোতির্ময়ী—

তোমাকে দিলাম পৃথিবীর সব পাখিদের কলরব।

যুদ্ধ তোমার শেষ হয়নিকো
ফিরতে পারোনি ঘরে,
ক্ষুধাতুর শিশু তোমার জন্য দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে ।
এশিয়ার এক মজলুম দেশে তোমার নীলাম্বরী
—তাই তো প্রাণের পতাকার মতো ওড়ে।

হাজেরা জননী তাই মাঠে মাঠে পানির অন্বেষণে
ক্লান্তিবিহীন ছুটে যাও তুমি প্রান্তরে জনপদে।
দু’চোখে তোমার স্বপ্নের রেণু,
স্বপ্নের পাশে প্রমিথিউসের আগুন।
সে আগুনে হবে পাললিক দেশে জীবনের জাগরণ।

তোমার হাতে দিলাম তুলে আমার বাংলাদেশ।

ফেসবুক প্রোফাইল থেকে সংগ্রহীত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *