নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে। চলতি বছরের নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে আগামী শিক্ষাবর্ষে ২০১২ সালের সৃজনশীল কারিকুলাম পুনর্বহাল করা হচ্ছে। এ পরিবর্তনের ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সাত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পুরনো কারিকুলামের পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে। তবে প্রাথমিকের প্রথম তিন শ্রেণির পাঠ্যবই চলতি শিক্ষাবর্ষের নতুন শিক্ষাক্রমের আদলে থাকবে।
সম্প্রতি অভিভাবকদের চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন কারিকুলাম বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে চলতি বছরে শিক্ষার্থীরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে, যেখানে ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং ৩০ নম্বরের শিখনকালীন মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বুধবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ডিসেম্বরে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নকাঠামো ও সিলেবাস প্রকাশ করেছে। এই নির্দেশিকায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তিন ঘণ্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং ৩০ নম্বর শিখনকালীন মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এনসিটিবি জানিয়েছে, ২০১২ সালের সৃজনশীল কারিকুলামে পাঠ্যবইয়ের কিছু পরিচ্ছেদ পরিমার্জিত হবে এবং নতুন কিছু বিষয় সংযোজন করা হবে। নবম শ্রেণির পাঠ্যবইও বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ অনুযায়ী পুনর্নির্মিত হবে। তবে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান, এনসিটিবির নতুন চেয়ারম্যান, জানিয়েছেন যে ২০২৫ সাল থেকে ২০১২ সালের সৃজনশীল পদ্ধতি অনুযায়ী পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হবে। এছাড়া এসএসসি পরীক্ষাও সৃজনশীল পদ্ধতির আলোকে নেওয়া হবে। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি তৈরি করা হবে, যাতে তারা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যে পাঠ্যসূচি সম্পন্ন করতে পারে।
বর্তমান নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আগামী জানুয়ারিতে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা নির্ধারণ করবে। তাদের জন্য ২০১২ সালের সৃজনশীল কারিকুলামের আলোকে পরিমার্জিত বই প্রদান করা হবে।
এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক জানিয়েছেন, নতুন কারিকুলাম বাতিল হওয়ার ফলে কিছুটা অসুবিধা হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বিএফ শাহীন স্কুলের নবম শ্রেণির হাসান মন্তব্য করেন, দীর্ঘ সাত বছর সৃজনশীল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করায় নতুন পরীক্ষার পদ্ধতিতে তাদের পড়াশোনায় প্রভাব পড়বে না।
মাউশির মাধ্যমিকের পরিচালক প্রফেসর জাফর আলী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে এবং আগামী শিক্ষাবর্ষে পুনরায় পদ্ধতি পরিবর্তন হবে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ এমাম হোসাইন জানান, নতুন কারিকুলামে ফিরে আসা নিয়ে প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে এবং পাঠদান কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলবে।