নিজস্ব প্রতিবেদক: বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন যে, গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সকলের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যয় সরকার বহন করবে। ভাষণটি একযোগে বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড ও বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়।
ড. ইউনূস বলেন, “আমি আগেও জানিয়েছি, আবারো জানাচ্ছি, গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সকল শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। আহত শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে।” তিনি আরও জানান, আহতদের দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এটি নিয়মিত হাল নাগাদ করা হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে সরকার ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এই ফাউন্ডেশন শহীদ পরিবার ও আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। দেশের সব মানুষ ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের আমরা দান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”
বন্যার পরিস্থিতি সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী সিলেট অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা ঘটেছে যা স্থানীয় মানুষদের হতভম্ব করে দিয়েছে। “এই এলাকার বেশিরভাগ জায়গায় কোনো দিন বন্যা হয়নি। দেশপ্রেমিক সশস্ত্রবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে বন্যা আক্রান্তদের রক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছে। সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনী একযোগে কাজ করার ফলে মানুষের দুর্ভোগ কমেছে।”
তিনি সেনাবাহিনীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “দেশের সকল দুর্যোগকালে তারা আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। বিশেষ করে বন্যা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে তাদের ভূমিকা অনন্য।” তিনি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সততা, ত্যাগ ও দেশপ্রেমের জন্য প্রশংসা করেন এবং তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, “বন্যা আমাদের জনজীবনে মানুষের সক্রিয় সহানুভূতির জোয়ার এনে দিয়েছে। ব্যবসায়ী, অর্থবান ব্যক্তিরা এবং সাধারণ মানুষ নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এনজিওরা বিভিন্ন জায়গা থেকে সহায়তা নিয়ে ছুটে এসেছে।” তিনি এনজিও নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার ও এনজিওদের কাজের সমন্বয়ের কাঠামো তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
ভাষণ শেষে, ড. ইউনূস পুনর্বাসনের কঠিন কাজ সামনে রেখে সকলের সহযেগিতায় সফলভাবে পুনর্বাসন কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেন।